করোনা নয় তো? সন্দেহ হলে যা করবেন
করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত নতুন ভিডিওতে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। আজকে আমরা করোনা সন্দেহ হলে কি কি করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানবো । চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিই।
শরীরে হালকা জ্বর, খুশ খুশ করে কাশছেন—সন্দেহ হতে পারে, করোনা নয় তো? কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনার কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড–১৯–এর প্রকাশ ঘটে জ্বরের মাধ্যমে। এমন অবস্থায় কী করবেন? জ্বর হলেই হাসপাতালে ছুটবেন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না, জ্বর হলেই হাসপাতালে ছোটার দরকার নেই। কারণ এই রোগ খুবই সংক্রামক। এতে একজন থেকে অন্যজন, এমনকি হাসপাতালের অন্য রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
তাহলে এমন অবস্থায় করণীয় কী? সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে, সন্দেহভাজন রোগীকে প্রাথমিকভাবে ঘরেই থাকতে হবে।
এই রোগ নিয়ে এত আতঙ্কের কারণ হচ্ছে এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। চিকিৎসার শরু হয় লক্ষণ দেখে। আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে ২ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ হয় জ্বর। এ ছাড়া শুকনো কাশি বা গলাব্যথা হতে পারে।
এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির অন্য রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্রোগ, কিডনির সমস্যা, ক্যানসার ইত্যাদি থাকলে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে।
প্রতিষেধক না থাকায় এর প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই এখন পর্যন্ত কার্যকর উপায়। এ জন্য ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন—এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে, অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে।
এ ছাড়া যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। আর এই মুহূর্তে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
কারও জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে ফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হবে। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে বা কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নাক-মুখ ঢেকে (মাস্ক ব্যবহার) বাড়িতে অপেক্ষা করতে হবে। অবস্থা খারাপ হলে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।
করোনা প্রতিরোধে করণীয়:
- বাহিরে হ্যান্ড গ্লাভস এবং মাস্ক ব্যবহার করুন। বাস, ট্রেন বা এজাতীয় গণপরিবহনগুলো এড়িয়ে চলুন।
- সাবান, পানি অথবা জীবানুনাশক জেল দিয়ে বারবার হাত ধুয়ে নিন।
- কাশি বা হাঁচির আগে টিস্যু বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে নিন।
- হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
- ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখুন এবং অসুস্থ লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
- কোনো কিছু খাওয়া কিংবা রান্না করার আগে ভালো হাত ধুয়ে নিন। মাছ মাংস রান্নার সময় ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিন।
- করোনাভাইরাস আক্রান্ত কিনা সন্দেহ হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।
এ ছাড়া করোনাসংক্রান্ত তথ্য জানতে বা সহযোগিতা পেতে স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ এবং ৩৩৩ নম্বরে ফোন করা যাবে।