A+ এবং Golden A+এর মধ্যে পার্থক্য কি? | জেনে নিন গোল্ডেন A+ এর আসল রহস্য

গোল্ডেন A+ এবং সাধারণ A+এর আসল কাহিনীঃ-
আমরা অনেকেই গোল্ডেন A+ এর  ইতিবৃত জানিনা।  Golden A+ ও A+ নিয়ে আমরা সাধারণত যে বিষয়টি জানি সেটি হল সব বিষয়ে GPA-5 পেলে তাকে গোল্ডেন এ+ বলে, আর সব বিষয়ে না পেয়েও GPA-5 পেলে সেটিকে শুধু এ+ বলে। কিন্তু সত্যি কথা হল যে Golden A+ নামে কোন গ্রেডই আমাদের দেশে নেই। এটা মানুষের মনগড়া তৈরী (প্রচলিত) শব্দ। ২ ধরনের এ+ কে পার্থক্য করতেই কিছু মানুষ গোল্ডেন এ+ এর ব্যবহার শুরু করে।

২০০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে পাবলিক পরীক্ষায় (এসএসসি) গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হয়। প্রথম বছর সারাদেশে এ প্লাস বা জিপিএ ৫ পায় মাত্র ৭৬ জন শিক্ষার্থী। ফোর সাবজেক্ট ছাড়া। এরপর রকেট গতিতে বাড়তে থাকে এ প্লাসের সংখ্যা।

২০০৩ ও ২০০৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বিষয়টি জোরালো হলো। কেউ কেউ সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে, তাকেও বলা হচ্ছে এ প্লাস বা জিপিএ ফাইভ। আবার যারা দুএকটি বিষয়ে এ প্লাস না পেলেও গড় নম্বরে এ প্লাস পাওয়াদের বলা হচ্ছে এ প্লাস। আবার কারো ফোর সাবজেক্ট নিয়ে এ প্লাস হয় কিন্তু ফোর সাবজেক্ট বাদে হিসেব কষলে এ প্লাস থাকছে না। ভালো ফলের সংখ্যা বাড়তে থাকে আর নিজেদের আলাদা করার কৌশল হিসেবে যারা সব বিষয়ে এ প্লাসধারী তারা ও তাদের অভিভাবকরা একে ‘হীরক’ বা ‘গোল্ডেন জিপিএ’ বলা শুরু করেন।

কত নম্বরে কোন গ্রেড দেখুন এক নজরে :

  • ৮০ থেকে ১০০ নম্বর প্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৫, লেটার গ্রেড এ প্লাস। এটাই সর্বোচ্চ গ্রেড।
  • এরপর ৭০ থেকে ৭৯ নম্বর প্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৪, লেটার গ্রেড এ।
  • ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর প্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৩.৫০, লেটার গ্রেড এ মাইনাস।
  • ৫০ থেকে ৫৯ নম্বর প্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৩, লেটার গ্রেড বি।
  • ৪০ থেকে ৪৯ নম্বর প্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ২, লেটার গ্রেড সি।
  • ৩৩ থেকে ৩৯ নম্বর প্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট এক, লেটার গ্রেড ডি।
  • আর শূন্য থেকে ৩২ পাওয়া শিক্ষার্থীদের গ্রেড পয়েন্ট জিরো, লেটার গ্রেড এফ।

 

জিপিএ ১ অর্জন করলেই তাকে উত্তীর্ণ হিসেবে ধরা হয়। কোনো বিষয়ে এফ গ্রেড না পেলে চতুর্থ বিষয় বাদে সব বিষয়ের প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্টকে গড় করেই একজন শিক্ষার্থীর লেটার গ্রেড নির্ণয় করা হয়।

চলুন আরেকটু পরিস্কার করে বলি,

মনে করুন একজনের মোট ৯ টা সাবজেক্ট আছে, যার ১ টি কে  অতিরিক্ত বা অপশনাল সাবজেক্ট হিসেবে ধরা হয়। এই অতিরিক্ত সাবজেক্টে প্রাপ্ত জিপিএর ২ বাদ দিয়ে বাকিটা অন্য ৮ সাবজেক্টের জিপিএর সাথে যোগ দিয়ে ৮ দিয়ে ভাগ দেয়া হয়।

এখন কেউ মেইন ৮ বিষয়ের মধ্যে ৫ টি তে A+ পেলে তাহলে তার পয়েন্ট হবে ৫ x ৫= ২৫

আর বাকি ৩টি বিষয়ে শুধু  A পেলে তার পয়েন্ট হবে ৩ x ৪ = ১২

অপশনাল সাবজেক্টে এ+ = ৫-২ = ৩

তাহলে এবার তার মোট পয়েন্ট হবে ২৫+১২+৩=৪০

এখন ৪০ কে ৮ ( অপশনাল ছাড়া যতটি বিষয় থাকবে) দিয়ে ভাগ দিলে তার ফলাফল হবে জিপিএ-৫। এভাবে সর্বোচ্চ জিপিএ ৫; অর্থাৎ, ৫ এর বেশি এলেও ৫ ই। সেটা কখনোই গোল্ডেন এ+ হবেনা জিপিএ-৫ ই থাকবে।

 

আশা করি আপনিও আর Golden A+ কথাটি বলবেন না। যারা এই বিষয়টি একেবারেই জানেনা তাদেরকে এখনই এই পোস্টের  লিংকটি পাঠিয়ে দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here