JSC,SSC,HSC পরীক্ষায় সৃজনশীল ৭টি প্রশ্নে ১০ এ ১০ নাম্বার পাবার সহজ উপায়|Techniques For Answering Creative Questions Effectively

সৃজনশীল পরীক্ষায় ভালো মার্কস তোলার কিছু শর্টকাট কৌশল 

JSC, SSC , HSC পরীক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রশ্নে নম্বর বেশি পাওয়ার উপায়

সুপ্রিয়, পরীক্ষার্থী বন্ধুরা কিভাবে সৃজনশীল প্রশ্নে বেশি নম্বর পাওয়া যায়?তোমরা কি তা সঠিকভাবে জান? তোমাদের সুবিধার্থে আমি আমার লেখায় তা তুলে ধরার চেষ্টা করব। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আমরা পরীক্ষকরা যে বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি তা হলো :

১)  খাতার সৌন্দর্য রক্ষা

২) বানানের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ

৩) বাক্যগঠনে তত্ত্বভিত্তিক তথ্য উপাস্থাপন

৪) অপ্রয়োজনীয় শব্দ বা ভাষা বর্জন

৫) কাটাকাটি যতদূর সম্ভব না করা

৬) অপ্রাসঙ্গিক বিষয় উপাস্থাপন থেকে বিরত থাকা

৭) প্রশ্নোত্তরে স্বচ্ছতা থাকা বাঞ্চনীয়

৮) প্রয়োজনীয় মার্জিন বা মার্জিনের জায়গা রাখা বাঞ্চনীয়

৯) সৃজনশীলের ক্ষেত্রে উদ্দীপক ও পাঠ্য বইয়ের সমন্বয় সাধন

১০) একই কথা বারবার না লেখা

১১) বহুনির্বাচনির ক্ষেত্রে প্রশ্ন অনুযায়ী ভেবে ভেবে উত্তর করা

১২) সর্বোপরি নির্ভেজাল তথ্যসমেত গঠনমূলক বিশ্লেষণ পরীক্ষার্থীদৈর আত্মবিশ্বাসে লেখলেই ভালো  ফলাফল করা যাবে।

এখন, আমরা সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনিতে ভালো করার কিছু কৌশল জানবো :

সৃজনশীল অংশ

সৃজনশীল অংশে প্রশ্ন থাকবে ১১টি উত্তর দিতে হবে ৭টি মোট নম্বর ৭০। সময়: ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট।

একটি সৃজনশীল প্রশ্নের ৪টি অংশ থাকে। যথা:

ক) জ্ঞানমূলক অংশ

খ) অনুধাবনমূলক অংশ

গ) প্রয়োগমূলক অংশ

ঘ) উচ্চতর দক্ষতামূলক অংশ

এইসব অংশের উত্তরে সর্বোচ্চ (১+৫+১২+১৬) ৩৪ বাক্য এবং সর্বনিম্ন (১+৪+১০+১২) ২৭ বাক্য উত্তরের ক্ষেত্রে হতে পারে।

ক. জ্ঞানমূক অংশ : প্রদত্ত নাম্বার-১ [পাঠ্য বই হতে এক কথায় বা এক বাক্যে সঠিক উত্তর দিবে; এখানে কোনো বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণের দরকার নেই]

খ. অনুধাবনমূলক : প্রদত্ত নাম্বার-২ (১+১) [অংশ দুটি : জ্ঞানমূলকে-১ চিন্তন বিশ্লেষণে-১। [প্রশ্নে যা চাইবে এক কথায় উত্তরের আসলবস্তু জ্ঞান আকারে লেখতে হবে আর দ্বিতীয় প্যারাতে বিশ্লেষণ করে সেটা সর্বোচ্চ ৩-৪ লাইন হলে ভালো হয়। মনে রাখা প্রয়োজন অনুধাবনমূলক প্রশ্নে উত্তরের ক্ষেত্রে সব মিলে সর্বনিম্ন ৪ এবং সর্বোচ্চ ৫ বাক্যে শেষ করতে হবে।]

গ. প্রয়োগমূলক অংশ প্রদত্ত নাম্বার-৩ (১+১+১) [এখানে পরীক্ষার্থীদের তিনটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে হবে। অংশগুলো হলো : প্রথমত, উত্তরের শুরুতেই মূল উত্তরটুকু অর্থাত জ্ঞানমূলক আকারে ১ বাক্যে উত্তর লিখতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রশ্নে চাওয়া বিষয়ের সাথে মূল পাঠ্যের সম্পর্ক নিরূপণের প্রয়াস পেতে হবে; যাকে ব্যাখ্যায় অংশ বলা যেতে পারে। তৃতীয়ত,  অবশ্যই সম্পর্ক নিরূপণের ক্ষেত্রে প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে হবে। যা উদ্দীপক এবং মূলপাঠ্যকে একটি নিবিড় সম্পর্কের জালে ফেলবে। এটি হলো অর্জিত জ্ঞান এবং অনুধাবন নতুন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার ক্ষমতা। ১ম প্যারা ১বাক্য; ২য় প্যারা-২/৩বাক্য আর তৃতীয় ৬/৮বাক্য হতে পারে। এখানে সর্বোচ্চ ১২ বাক্য লিখতে পারবে।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতামূলক : প্রদত্ত নাম্বার-৪ (১+১+১+১) [এখানে তোমাকে চারটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে হবে। অংশগুলো হলো : প্রথমত, উত্তরের শুরুতেই মূল উত্তরটুকু অর্থাত্ জ্ঞানমূলক আকারে ১বাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রশ্নমোতাবেক উদ্দীপক ধরে চিন্তন শক্তি ব্যাখ্যা করতে হবে। তৃতীয়ত, প্যারাতে উদ্দীপক ও মূল পাঠ্যের সম্পর্কগত আলোচনা করতে হবে। চতুর্থত, সার্বিক বিশ্লেষণ করতে হবে সেক্ষেত্রে উদ্দীপক, মূলপাঠ্য বিষয় ও পারিপার্শ্বিক জীবন ব্যবস্থার সাথে মিল রেখে পরীক্ষার্থীর অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবে। ১ম প্যারা ১বাক্য; ২য় প্যারা-২/৩ বাক্য আর তৃতীয় প্যারা-৩/৪ বাক্য ৪র্থ প্যারা-৬/৮বাক্য হতে পারে। এখানে সর্বোচ্চ ১৫ বাক্য লিখতে পারবে।

 একটি সৃজনশীল প্রশ্ন কত মিনিটে লিখবো?

আমরা এখনো অনেকেই জানিনা যে সৃজনশীল কিভাবে লিখলে ভাল মার্কস পাওয়া পসিবল। তাই আমি মনে করি সৃজনশীল লিখার মেথডটা আমাদের জানা উচিত। দেখা যায় ৭ টা সৃজনশীল আসার পর আমরা অনেকেই সবগুলো প্রশ্নের উত্তরও করতে পারিনা এর একমাত্র কারন হচ্ছে নিয়মের বাহিরে যেয়ে লিখা।যার কারনে দেখা যায় প্রথমে অনেক বড় বড় করে লিখে লাস্টে এসে টাইম থাকেনা। এজন্য প্রথমেই আমাদেরকে আগে টাইম ম্যানেজমেন্ট করে নিতে হবে।

আমরা প্রতিটা প্রশ্নের জন্য ১৯ মিনিট করে নিবো।

যেমন আমি এভাবে লিখতাম:
(ক+খ) ৫ মিনিটে লিখা শেষ করতাম।
(গ) ৬ মিনিট এবং (ঘ) ৮ মিনিটে লিখতাম।

এই টাইমে লিখতে পারলে পরে খাতা চেক করার জন্য আরো ৭/৮ মিনিট পাবে।

একটি সৃজনশীল প্রশ্ন কত কত পৃষ্টা বা কত লাইন লিখবো?

লিখার দৈর্ঘ্যটা হবে ক+খ এর জন্য প্রথম পেজ অর্থাৎ এক পৃষ্ঠা।

গ হবে এক পৃষ্ঠা+অপর পৃষ্ঠার ওয়ান ফোর্থ। আর ঘ হবে ওই পৃষ্ঠা শেষ করা এবং বাকি আরেক পৃষ্ঠা।

উত্তর লাইন হিসেব করে লিখার কোনোই দরকার নেই।
এমন কোনো টিচার নেই যার কিনা টাইম আছে তুমি কত লাইন লিখলা তা গুনে দেখার।
তাই বলবো লাইন হিসেব করে লিখার কোনোই দরকার নেই।

বহুনির্বাচনি অংশ

বহুনির্বাচনি অংশে মোট প্রশ্ন: ৩০, মোট নম্বর: ৩০, সময়: ৩০ মিনিট। শিক্ষার্থীদের তিনটি স্তর পার করে তবেই মোট ৩০টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। মূল বই বারবার পড়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের নিচে দাগ দিয়ে রাখলে খুব ভাল। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি কিংবা ইতিহাসের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের যেসব বিষয়ের উপর খুব গুরুত্ব দিতে হবে তাহল: ভৌগোলিক অবস্থার উপর, গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের ঘটনা, গুরুত্বপূর্ণ সাল,  বিভিন্ন স্থানের নাম, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, রাজা বাদশাদের নাম, পরিচয় ও কৃতিত্ব, এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিকের গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার বা গ্রন্থের নাম মনে রাখতে হবে। বর্তমান ক্যাটাগরিতে যে তিনটি স্তর পরীক্ষার্থীদের পার করতে হবে তাহলো :

(ক) সাধারণ বহুনির্বাচনি অংশ: এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতি নির্ভর। এক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো কখনো প্রশ্ন আকারে আবার কখনো অসম্পূর্ণ বাক্য হিসেবে দেওয়া থাকে যা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। বিকল্প উত্তর ৪টি, যার মাত্র একটি সঠিক। এ বিভাগে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা এ ৪টি উপবিভাগ বিদ্যমান থাকে।

(খ) বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন: এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতি নির্ভর নয়। পরীক্ষা ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি আমাদের দেশে নতুন। এ ধরনের প্রশ্নে শুরুতে ৩টি তথ্য ভিত্তিক উপাস্থাপন থাকে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরে ৪টি প্রশ্ন তৈরি করা হয়, রোমান বর্ণে বরাদ্ধ এ প্রশ্নে অনেক সময় একাধিক উত্তর থাকে যার উত্তর প্রদত্ত চারটি প্রশ্নে বিদ্যমান। অতি নিখুঁতভাবে ভেবে পরীক্ষার্থীদের এখানে উত্তর করতে হবে। এ স্তরে অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতর দক্ষতা যাচাই করতে হয়।

(গ) অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন: অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্নে একটি অভিন্ন তথ্য বা সাধারণ ভূমিকা থাকে। যা একটি অনুচ্ছেদ, টেবিল, ছক, মানচিত্র, ঘটনা প্রভৃতি হয়ে থাকে। এ অভিন্ন তথ্যের উপর ভিত্তি করে সাধারণ বহুনির্বাচনি এবং বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্নের সমন্বয়ে দুটি থেকে সর্বোচ্চ চারটি প্রশ্ন করা হয়। এ ধরনের প্রশ্নের অভিন্ন তথ্যাদি শিক্ষার্থীকে প্রশ্নোত্তরে প্ররোচিত করে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে প্রশ্নটি খুব মনোযোগের সঙ্গে পড়বে এবং উত্তরটি নির্ধারণ করবে। প্রশ্ন বুঝতে ব্যর্থ হলে উত্তর ভুল হয়ে যাবে। কোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নিশ্চিতভাবে জানা না থাকলে তা নিয়ে সময় নষ্ট না করে তার উত্তরটি দিতে হবে জানা উত্তরটি শেষ করার পর। অজানা প্রশ্নের উত্তর দিবে গভীরভাবে ভেবেচিন্তে এবং কিছুটা অনুমান ভিত্তিক। উত্তর যদি ভুলও হয়ে যায় তার জন্য কোনো নাম্বার কাটা যাবে না। তাই সকল প্রশ্নেরই উত্তর দিতে হবে।

যেহেতু বল পয়েন্ট কলম দিয়ে উত্তরের বৃত্তটি ভরাট করতে হয়। তাই যথেষ্ট ভেবেচিন্তে উত্তরটি চিহ্নিত করতে হবে। ভুল করলে আর সংশোধনের কোনো সুযোগ থাকবে না। আর সবগুলো বৃত্ত ভরাট করার জন্যে প্রয়োজনীয় সময় হাতে রাখতে হবে।

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ উপরের নির্দেশনামত তোমরা যদি চেষ্টা কর তবে সৃজনশীল প্রশ্নে ভাল নম্বর পাওয়া এবং পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করা তোমাদের জন্য অসম্ভব হবেনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here